নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) বলেনঃ
“আল্লাহকে ভয় করো! আমার সাহাবাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর! আমার পর (আমার ইন্তেকালের পর) তাদেরকে সমালোচনার লক্ষ্যে পরিণত করো না। যে তাদের ভালোবাসে, সে আমার প্রতি তার ভালোবাসার কারণে তাদের ভালোবাসে, আর যে তাদের ঘৃণা করে, সে আমার প্রতি তার ঘৃণার কারণে তাদের ঘৃণা করে। যে তাদের কষ্ট দেয় সে অবশ্যই আমাকে কষ্ট দেয়, আর যে আমাকে কষ্ট দেয় সে অবশ্যই আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে, আর যে আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে, আল্লাহ শীঘ্রই তাকে পাকড়াও করবেন!”[1]
মুসলমানদের জন্য হযরত সা’দ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর বাণী।
উহুদ যুদ্ধের সময় হযরত রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, “সাদ ইবনে রাবী কোথায়? আমি তার অবস্থা জানি না।” অতঃপর একজন সাহাবা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)-কে তাঁকে খোঁজার করার জন্য পাঠানো হয়। তিনি ঐ যায়গায় যান যেখানে শহীদদের লাশ পড়ে ছিল।
তিনি হযরত সা’দ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বেঁচে আছেন কিনা তা জানার জন্য তাঁর নাম ধরে ডেকে দেখলেন। যখন তিনি এক জায়গায় ঘোষণা করছিলেন যে, হযরত সা’দ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)-এর খোঁজ নেওয়ার জন্য তাঁকে হযরত রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) নিযুক্ত করেছেন, তখন তিনি একটি ক্ষীণ আওয়াজ শুনতে পেলেন যা একটি নির্দিষ্ট দিক থেকে আসছিলো। তিনি সেদিকে ফিরে দেখলেন যে হযরত সা’দ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) শহীদদের মাঝে শুয়ে আছেন এবং শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চলেছেন।
হযরত সা’দ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) কে বলতে শোনা যায়, “রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) কে আমার সালাম এই বাণীর মাধ্যমে পৌঁছে দিন, ‘হে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)! আল্লাহ আপনাকে আমার পক্ষ থেকে এমন একটি পুরস্কার দান করুন যা আল্লাহ তাআ’লা কোনো রসুলকে তাঁর কোনো অনুসারীর পক্ষ থেকে দান করেছেন এমন কোনো পুরস্কারের চেয়েও বেশি উচ্চ ও সুন্দর পুরস্কার!’”
অতঃপর, তিনি যাকে খোঁজার করার জন্য প্রেরণ করা হয়েছিল তাকে বললেন, “আমার মুসলিম ভাইদের জানিয়ে দাও যে, কিয়ামতের দিন কোন কিছুই তাদের দোষ থেকে রেহাই দিবে না যদি শত্রুরা রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর কাছে পৌঁছাতে এবং তাদের সকলের মৃত্যুর আগে তাকে হত্যা করতে সক্ষম হয়।” এই কথা বলে হযরত সা’দ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এবং দুনিয়া থেকে বিদায় নেন।[2]
সাহাবায়ে কেরাম (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)-এর প্রতি তাদের ভক্তির সত্য প্রমাণ দিয়েছেন। যখন তারা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতেছিলেন, তখন তাদের ঠোঁটে কোন অভিযোগ বা কামনা ছিল না এবং তারা হযরত রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)-এর নিরাপত্তা ও কল্যাণ ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারেনি। হযরত রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর জন্য সাহাবায়ে কেরাম যে সত্যিকারের ভালোবাসার অণু ধারণ করেছিলেন, আমরা যেন তার অনুগ্রহ লাভ করতে পারি।[3]
[1] سنن الترمذي، الرقم: 3862
[2] موطأ الإمام مالك، الرقم: 1691، تاريخ الطبري 2/528
[3] فضائل اعمال صـ 170