ইস্তিঞ্জার সুন্নাত এবং আদব – ভূমিকা

পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব

ইসলাম হচ্ছে পুরোপুরি পবিত্রতা এবং পরিচ্ছন্নতার ধর্ম। ইসলাম মানব জীবনের সকল বিভাগে পবিত্রতা এবং পরিচ্ছন্নতা অর্জনের পরামর্শ দেয়। হযরত রসুলুল্লাহ  (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:

الطهور شطر الإيمان

পবিত্রতা ঈমানের অর্ধাঙ্গ।[1]

বরং, ইসলাম আমাদের অভ্যন্তরীণ  এবং বাহ্যিকভাবে পবিত্র থাকার দিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিচালিত করেছে এবং পথ দেখিয়েছে। যেভাবে আমাদের শরীরিক এবং মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি অবলম্বনের মাধ্যমে শারীরিক ভাবে  পরিচ্ছন্ন থাকার হুকুম দেওয়া হয়েছে, একইভাবে আমাদের অন্তর এবং মনকে  গুনাহ যেমন: হিংসা, গর্ব, লোভ লালসা ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে আত্মিকভাবে পবিত্র থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ্ তাআ’লা কুরআন মাজিদে বলেন:

قَدْ اَفْلَحَ مَنْ تَزَكّٰى

অবশ্যই সে ব্যক্তি সফল যে অভ্যন্তরীণ পবিত্রতা অর্জন করেছে।[2]

যদি কেউ শরিয়তের বিভিন্ন বিধিনিষেধের দিকে তাকায় যেমন , প্রস্রাব পায়খানার পর ইস্তিঞ্জা করা, নামাজের জন্য অযূ করা, ঘুম থেকে উঠার পর, নামাজের আগে, যখন মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়, ঘুমানোর আগে ইত্যাদি সময়ে মিসওয়াক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা, ইহরামে প্রবেশের আগে অথবা ঈদ বা জুম্মার নামাজে যোগ দেওয়ার আগে গোসল করা, আপনি অনুধাবন করতে পারবেন যে , মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের পবিত্রতা এবং পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জোর দেওয়ায় ইসলাম অদ্বিতীয়।

হযরত রসুলুল্লাহ  (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: চারটি কাজ সকল নবীদের (আলাইহিমুস সালাম) সুন্নত থেকে: হায়া অবলম্বন করা (মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রে শালীনতা বজায় রাখা) , আতর ব্যবহার করা , মিসওয়াক করা, বিবাহ করা।[3]

যখন আমরা উপরের হাদিসে বর্ণিত কাজগুলো নিরীক্ষা করি, আমরা  দেখতে পাই যে, এর সবই অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক পবাত্রতা অর্জনের সাথে যুক্ত।

অন্যদিকে পরিচ্ছন্নতাকে অবহেলা করার জন্য হাদিসে কঠিন সাবধানবাণী এবং আজাবের উল্লেখ আছে। নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে অসতর্ক থাকার মাধ্যমে, ঐ ব্যক্তি অপবিত্র থাকবে,  ফলে সেটি তার নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদত (যার পূর্বশর্ত পরিচ্ছন্নতা), বাতিল হওয়ার কারণ হবে। একইভাবে শারীরিক এবং মৌখিক স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে অবহেলার কারণে সে ব্যাক্তি, অন্যরা কষ্ট পাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।


[1] عن أبي مالك الأشعري قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: الطهور شطر الإيمان (صحيح مسلم، الرقم: 223)

[2] سورة الأعلى: 14

[3] عن أبي أيوب رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: أربع من سنن المرسلين، الحياء والتعطر والسواك والنكاح (سنن الترمذي، الرقم: 1080 وقال: حديث أبي أيوب حديث حسن غريب)

Check Also

পুরুষের নামাজ – সপ্তম খন্ড

রুকু এবং কওমা (১) সূরা ফাতিহা এবং কিরাত পড়া শেষ হলে পুনরায় তাকবীর পড়া এবং …