রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) একবার হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) কে বললেন:
“তুমি কি সন্তুষ্ট নও যে, আমার কাছে তোমার মর্যাদা মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর সাথে হারুন (আলাইহিস সালাম)-এর মর্যাদার মত হবে, কিন্তু এতটুকুই পার্থক্য যে আমার পরে আর কোন নবী আসবে না?” (সহীহ বুখারী #৩৭০৬)
রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)-এর হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু)-কে মদীনা মুনাওয়ারায় নিযুক্ত করেছিলেন।
তাবুকের যুদ্ধের সময়, যখন রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) মদীনা মুনাওয়ারাহ থেকে বিদায় নিচ্ছিলেন, তখন তিনি হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু)-কে তাঁর অনুপস্থিতিতে মদীনা মুনাওয়ারার কাজ তত্ত্বাবধানের জন্য নিযুক্ত করেছিলেন।
তাই রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর নির্দেশে হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) সৈন্যবাহিনী নিয়ে বের হননি, বরং তিনি মদীনা মুনাওয়ারায় থেকে যান।
অতঃপর কিছু লোক গুজব ছড়াতে শুরু করে যে, রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) যে কারণে হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু)-কে পিছনে থাকতে বলেছিলেন তা হল তিনি তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন। একথা শুনে হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) সাথে সাথে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)-এর কাছে এসে লোকেরা যা বলছে তা তাঁর কাছে উল্লেখ করলেন।
এক বর্ণনায় আছে, হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)-কে বললেন, “হে আল্লাহর রসুল! আমি চাই না যে আরবরা আমার সম্পর্কে বলুক, ‘সে তার চাচাতো ভাইকে (রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম কে) পরিত্যাগ করে পিছনে থেকে গেছে।’”
অধিকন্তু, হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু)-এর সেনাবাহিনীতে যোগদান করার গভীর ইচ্ছা ছিল যাতে তিনি আল্লাহর পথে সংগ্রাম করতে পারেন। অন্য বর্ণনায় আছে, হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) কে বললেন, “হে আল্লাহর রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)! আপনি কি আমাকে নারী এবং শিশুদের সাথে রেখে যাচ্ছেন?”
রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) তাকে সান্ত্বনা দিলেন এবং বললেন, “তুমি কি সন্তুষ্ট নও যে, আমার কাছে তোমার মর্যাদা মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর সাথে হারুন (আলাইহিস সালাম)-এর মর্যাদার মত হবে, কিন্তু এতটুকুই পার্থক্য যে আমার পরে আর কোন নবী আসবে না?”
অন্য কথায়, নবী মূসা (আলাইহিস সালাম) যখন তূর পাহাড়ে যান, তখন তিনি তাঁর ভাই নবী হারুন (আলাইহিস সালাম)-কে লোকদের দায়িত্বে রেখে যান। এটি নবী হারুন (আলাইহিস সালাম)-এর উচ্চ মর্যাদা এবং নবী মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর তাঁর প্রতি যে আস্থা এবং ভরসা ছিল তা নির্দেশ করে।
একইভাবে, রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু)-কে জানিয়েছিলেন যে তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁকে মদীনা মুনাওয়ারার করা নিযুক্ত করা একটি আলামত যে, রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) তাঁর প্রতি আস্থা রেখেছিলেন।
হযরত আলী (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) এ কথা শুনে তৎক্ষণাৎ বললেন, “আমি সন্তুষ্ট, আমি (আল্লাহ এবং তাঁর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)-এর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট।”