সায়্যিদুনা রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম) বলেনঃ
قال سيدنا رسول الله صلى الله عليه وسلم: إن الله اختارني (لأكون خاتم النبيين) واختار لي أصحابا (أنصارا لي) (المعجم الكبير للطبراني، الرقم: 349)
“আল্লাহ তাআ’লা আমাকে (শেষ নবী হওয়ার জন্য) পছন্দ করেছেন এবং আমার জন্য আমার সাহাবাদের পছন্দ করেছেন (আমার সহায়তাকারী হিসেবে)।”
রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম) এর দোয়ার মাধ্যমে গুনাহ ত্যাগ করা।
জাফর আস-সা-ইগ (রহমতুল্লাহি আলাইহ) নিম্নলিখিত বর্ণনা করেনঃ
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহমতুল্লাহি আলাইহ)-এর প্রতিবেশীদের মধ্যে একজন ব্যক্তি ছিলেন যে বহু পাপ, মন্দ ও নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত ছিল। একদিন এই ব্যক্তি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহমতুল্লাহি আলাইহ)-এর মজলিসে এসে তাঁকে সালাম দিলো। যাইহোক, যদিও ইমাম আহমাদ (রহমতুল্লাহি আলাইহ) তার সালামের উত্তর দিয়েছিলেন, তিনি তার প্রতি মনোযোগ দেননি এবং আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেননি। বরং, তিনি এই লোকটির উপস্থিতিতে অস্বস্তিবোধ করছিলেন (যেহেতু এই লোকটি মন্দ পথ এবং পাপপূর্ণ অভ্যাসের জন্য সুপরিচিত ছিল)।
লোকটি তৎক্ষণাৎ ইমাম আহমাদ (রহমতুল্লাহি আলাইহ)-এর অস্বস্তি টের পেলো এবং এভাবে বলল যে, “হে আবু আবদিল্লাহ (রহমতুল্লাহি আলাইহ)! আমার উপস্থিতিতে আপনি অস্বস্তিবোধ করছেন কেন? আমি যে স্বপ্ন দেখেছি তার কারণে পুরোপুরি বদলে গেছি এবং আমি আর সেই রকম ব্যক্তি নই যেভাবে আপনি আমাকে চিনতেন।” ইমাম আহমাদ (রহমতুল্লাহি আলাইহ) জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কী স্বপ্ন দেখেছ?”
লোকটি উত্তর দিলো, “আমি স্বপ্নে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম)-কে দেখেছি। দেখে মনে হচ্ছিল তিনি একটি উঁচু জায়গায় আছেন এবং তার নীচে অনেক লোক বসে আছে। এক এক করে লোকেরা দাঁড়িয়ে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম)-কে তাদের জন্য দু’আ করতে বলল। যখন তারা দাঁড়িয়ে তাদের অনুরোধ করছিলো, রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম) তাদের জন্য দু‘আ করলেন, যতক্ষণ না আমি বাকি রইলাম। আমিও দাঁড়িয়ে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম)-কে আমার জন্য দু‘আ করার জন্য অনুরোধ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার খারাপ কাজ ও পথের কারণে আমি তা করতে বিব্রত ও লজ্জিত বোধ করছিলাম। তখন রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম) আমাকে সম্বোধন করে বললেন, “হে অমুক! তুমি কেন দাঁড়িয়ে আমাকে তোমার জন্য দু‘আ করতে বলছ না?” আমি উত্তরে বললাম, “ইয়া রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম)! এটা আমার খারাপ কাজের জন্য আমার লজ্জা এবং বিব্রতবোধ যা আমাকে তা করতে বাধা দিচ্ছে।” রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম) উত্তর দিলেন, “যদি লজ্জা ও বিব্রতবোধ তোমাকে বাধা দেয়, তাহলে দাঁড়াও এবং আমার কাছে দু‘আ চাও। তারপরেও আমি তোমার জন্য দু‘আ করব, কারণ তুমি আমার সাহাবা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) সম্পর্কে খারাপ কথা বলো না।” এভাবে আমি দাঁড়ালাম এবং রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম) আমার জন্য দু‘আ করলেন। এরপর যখন আমি জেগে উঠলাম, দেখলাম যে, আমি যে সমস্ত পাপের সাথে জড়িত ছিলাম তার জন্য আল্লাহ তাআ’লা আমার মধ্যে সম্পূর্ণ ঘৃণা এবং বিতৃষ্ণা সৃষ্টি করেছেন।”
ইমাম আহমাদ (রহমতুল্লাহি আলাইহ) এ ঘটনা শুনে আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “হে জাফর! হে অমুক! এই ঘটনাটি লোকেদের বলো এবং এটি ভুলে যেয়ো না, কারণ এটি উপকারী এবং অনুপ্রেরণাদায়ক।”[1]
[1] كتاب التوّابين للمقدسي صـ 157-158