সত্তরজন ফেরেশতা হাজার দিবসের জন্য সওয়াব লিপিবদ্ধ করেন

عن ابن عباس رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من قال: جزى الله عنا محمدا بما هو أهله أتعب سبعين كاتبا ألف صباح (الطبراني في الأوسط، الرقم: 235)[1]

রত ইবনে আব্বাস (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহুমা) বর্ণনা করেন যে  হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশা করেন যে, যে ব্যক্তি  নম্নোক্ত (দুরুদ) পাঠ করে, সে সত্তর জন ফেরেশতাকে (পাঠ কৃত দরুদের সওয়াব লিপিবদ্ধ করায়) এক হাজার দিবসের জন্য (মশগুল এবং) ক্লান্ত করবে।

جَزٰى اللهُ عَنَّا مُحَمَّدًا صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ

আল্লাহ তা´আলা আমাদের তরফ থেকে হযরত মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে প্ৰতিদান দান করুন, যে প্ৰতিদানের সুযোগ্য তিনি (অর্থাত, যে প্রতিদান  তাঁর সু-উচ্চ মাকামের যোগ্য)

তাঁর উম্মতের জন্য হুজুর (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর  ভালোবাসা:

মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়ায় তাফসিরে কুশাইরি থেকে উল্লেখ করা হয় যে, কিয়ামতের দিবস কোন এক ইমানদার ব্যাক্তি হিসাবের জন্য অল্প পরিমান নেকি নিয়ে হাজির হবে। অতঃপর রসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) হাজির হবেন এবং আঙ্গুলের অগ্ৰভাগের সমতুল্য একটি ছোট কাগজ বের করে মিজানের নেকির পাল্লায়  রেখে দিবেন, যার ফলাফল এই হবে যে, নেকির পাল্লা, গুনাহের পাল্লার চাইতে ভারী হয়ে যাবে।

তা দেখার পর সেই ইমানদার ব্যাক্তি বলবেন, “আমার পিতামাতা আপনার উপর কুরবান হোক, আপনি কে? আপনার শারিরিক গড়ন কতই না সুন্দর এবং ব্যাবহার কতই না ভালো! হুজুর (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) উত্তরে বলবেন,” অবশ্যই আমি তোমার নবী। আর যা আমি তোমার পাল্লায় রেখেছি তা হলো দুরুদ শরিফ, যা তুমি তোমার জিন্দেগিতে আমার উপর পাঠ করতে। এখন আমি প্রয়োজনের সময় তোমার সাহায্যের জন্য এসেছি।[2]

রত রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)-এর বরকতময় চুলের শ্রদ্ধা এবং সম্মান করা

হযরত আবু হাফস, উমর ইবনে হাসান সমরকান্দি (রহিমাহুল্লাহ্) তার কিতাব রওনাকুল মাজালিসে নিম্নোক্ত ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন:

একসময় বালখ শহরে এক ধনী ব্যবসায়ী বাস করতেন এবং তার দুই পুত্র ছিল। তার মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে তার সম্পত্তি তাদের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে নেন।

রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর বরকতময় তিনটি চুল সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত ছিল। সম্পত্তি ভাগ করে নেওয়ার সময়, প্রতিটি পুত্র একটি করে চুল নিয়েছিল, তৃতীয় চুলে তাদের উভয়েরই ভাগ ছিল। তাই, বড় ভাই পরামর্শ দিলেন, “চলো আমরা তৃতীয় চুলটিকে অর্ধেক করে ফেলি যাতে আমরা প্রত্যেকে চুল থেকে আমাদের অংশ নিতে পারি।” তবে ছোট ভাই এই কথায় রাজি হননি এবং বললেন “না! আল্লাহর কসম, রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর প্রতি আমাদের যে শ্রদ্ধা এবং সম্মান দেখানোর কথা তা এমন যে, তাঁর বরকতময় চুল কাটা আমাদের জন্য অনুচিত।”

রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম)-এর বরকতময় চুলের প্রতি তার ছোট ভাইয়ের ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা বড় ভাই যখন প্রত্যক্ষ করল, তখন সে প্রস্তাব করল, “তুমি উত্তরাধিকারের অংশের বিনিময়ে চুল তিনটি কেন নিচ্ছো না? ”  রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর প্রতি ভালবাসার কারণে, ছোট ভাই রাজি হয়। তদনুসারে, বড় ভাই সমস্ত সম্পদ নেয় এবং ছোট ভাই চুল তিনটি নেয়।

ছোট ভাই পরম যত্নের সাথে সেগুলো তার পকেটে রাখল। অতঃপর, সে ক্রমাগত সেগুলো পকেট থেকে বের করত, ভালবাসার সাথে তাকাত এবং রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর উপর দুরুদ পাঠ করত। তারপর সে সেগুলো তার পকেটে ফেরত রাখত।

কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর বড় ভাইয়ের সমস্ত ধন-সম্পদ শেষ হয়ে যায়, অথচ ছোট ভাইকে আল্লাহ তাআলা অঢেল সম্পদ দান করেন। কিন্তু কিছুদিন পর ছোট ভাই মারা যায়।

সে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর, একজন ধার্মিক ব্যক্তি একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন যাতে তিনি ছোট ভাইকে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) এর সাথে একত্রে দেখতে পান। রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) ধার্মিক ব্যক্তিকে সম্বোধন করে বললেন, “মানুষকে বলুন যে, যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে কারো কোন প্রয়োজন থাকে তবে সে যেন এই ব্যক্তির (ছোট ভাইকে উল্লেখ করে) কবরে যায় এবং তার প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে। তার চাহিদা পূরণ হবে।”

এর পরে লোকেরা দোয়া করার জন্য এই ভাইয়ের কবরের কাছে আসত, এমনকি যারা তাদের বাহনে যেত তারা কবরে পৌঁছানোর আগে সম্মানের সাথে পায়ে হেঁটে নেমে যেত।[3]

‎يَا رَبِّ صَلِّ وَسَلِّم دَائِمًا أَبَدًا عَلَى حَبِيبِكَ خَيرِ الْخَلْقِ كُلِّهِمِ‎


[1] وفي سنده هاني بن المتوكل وهو ضعيف كما في القول البديع صـ 116

[2] شرح الزرقاني على المواهب 12/359

[3] رونق المجالس كما في القول البديع صـ 276

Check Also

দশ পদমৰ্যাদা বৃদ্ধি হওয়া

عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: …